Information

নবজাতকের সমস্যা

নবজাতকের সমস্যা, নবজাতকদের নিয়ে মায়েরা নানা সমস্যায় পড়েন। সে সম্পর্কে পরামর্শ।

 প্রশ্নঃ  আমার প্রি-টার্ম বেবি হয়েছে। ওজন ১ কিলো ৮০০ গ্রাম। পরবর্তিকালে আমার সন্তানের স্থানী কোনও অসুখ হতে পারে কি? ওর ওজন কীভাবে বাড়াব এবং কবে থেকে ভ্যাকসিন শুরু করব জানালে উপকৃত হব।

সাদিয়া রাহমান , ঢাকা বাড্ডা- ১২১২

উত্তরঃ  প্রি-টার্ম বেবি মানে হল গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ আগে জন্মানো। তার সঙ্গে লো বার্থ ওয়েটও থাকে। আপনার সন্তানকে প্রথম থেকেই বুকের দুধ খাওয়ান। এতেই আপনার শিশুর বাড়-বৃদ্ধি প্রথম ৬ মাসে অন্যান্য বাচ্চাদের মতো হবে। প্রিম্যাচিওর বাচ্চা অনেক সময় বুকের দুধ পুরো টেনে খেতে পারে না, হাঁপিয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে বুকের দুধ বের করে ঝিনুক বাটি দিয়ে খাওয়াতে পারেন। পূর্ণ সময়ে জন্মানো শিশু যে নিয়মে ভ্যাকসিন নিচ্ছে, আপনার

মায়ের বুকের দুধের কোনও বিকল্প নেই। এ ৬ মাস মাতৃদুগ্ধই শিশুর একমাত্র খাদ্য, পানীয় জলের কোনও প্রয়োজন নেই।

ডা: জয়ন্তকুমার চক্রবর্তী শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং নিওন্যাটোলজিস

বাচ্চাও সে নিয়মে ভ্যাকসিন নেবে। দেরি করার কোনও যুক্তি নেই। আপনার শিশুর যদি কনজেনিটাল সমস্যা না থাকে তবে পার্মানেন্ট ডিজএবিলিটির সম্ভাবনা কম। তবে স্নায়ুর সমস্যা কতটা হবে বা হবে না তা এই মুহূর্তে বলা মুশকিল। প্রতি মাসে একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। নিয়ে যান, উনিই বলে দেবেন আপনার শিশুর শারীরিক অবস্থা কেমন।

প্রশ্নঃ আমার বাচ্চার বয়েস ২২ দিন। অম্বলের দোষ আছে। এ ছাড়া পেটের গণ্ডগোল, মাথা ধরা ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দেয়। মাঝে মাঝে প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড, পেটের গণ্ডগোলের ওষুধ খেয়ে থাকি। এই অবস্থায় বাচ্চাকে কি বুকের দুধ খাওয়াব? 

জেরিন খাতুন , ঢাকা মালিবাগ

আপনার যে কোনও সমস্যাই থাকুক না কেন এবং অ্যান্টাসিড, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেলেও বুকের দুধ খাওয়ানো লক্ষ করবেন না। মনে রাখবেন, শিশু জন্মাবার পর প্রথম ৬ মাস মায়ের বুকের দুধই একমাত্র খাদ্য। শিশুর শরীরে কোনও ক্ষতি করে না।

প্রশ্নঃআমার বাচ্চার বয়েস প্রায় ১ মাস। বুকের দুধ গাওয়ানো মাত্রই স্টুল হয়। সারাদিনে অনেকবার। এ ছাড়া ও খাবার কিছুক্ষণ পরেই বমি করে এবং টক টক গন্ধ থাকে। আমার কী করা উচিত? 

নুসরাত , ঢাকা  

উত্তরঃ নবজাত শিশু মায়ের দুধ খেতে খেতেই টয়লেট করে। সারা দিনে-রাতে ১২/১৩ বার স্টল করতে পারে। আবার ১/২ বারও হতে পারে। আবার পর পর ৫-৬ দিন মলত্যাগ নাও করতে পারে। বাচ্চা দুধ খাওয়ার পর কিছুটা দুধ তোলে, টকটক ছানা কাটে, এটাই স্বাভাবিক। লক্ষ রাখতে হবে, ওজন ঠিকমত বাড়ছে কি না। তবে প্রতিবার খাবার পরই যদি ছিটকে বেরিয়ে আসে এবং ওজন না বাড়ে তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রশ্নঃ আমার বাচ্চার বয়েস ১০ দিন। জন্মানোর সময় ওর ওজন ছিল ২ কেজি ১০০ গ্রাম। এটা কি স্বাভাবিক ওজনের থেকে কম? কতটা কম? শুর কীভাবে বাড়াব ? আমি কতক্ষণ অন্তর ওকে দুধ খাওয়াব ?

উত্তরঃ বানোর সময় ওজন হওয়া উচিত ২.৫ কেজি। এর কম হলে বলা হয় লো বার্থ ওয়েট। ঠিকমত ব্রেস্টফিডিং করান। ওজন বেড়ে যাবে। ব্রেস্টফিডিং করানোর নিয়ম হল, ‘ডিমান্ড ফিডিং’ অর্থাৎ বাচ্চা কাঁদলে খাবে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ বার বাচ্চারা ফিডিং নেয়। প্রতি ফিডিংয়ে ২৫-৩০ মিনিট সময় লাগে।

প্রশ্নঃ আমি নতুন মা হয়েছি। চাকরি করি। মেটারনিটি লিভ ৩ মাস। ৩ মাস পরে বাচ্চাকে কী খাওয়া?

পায়েল রাহা, চট্টগ্রাম -২৩

উত্তরঃ প্রথম ৬ মাস মায়ের বুকের দুধের কোনও বিকল্প নেই। বুকের দুধ শিশুকে শুধু পুষ্টি দেয় না, দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া মায়ের ব্রেস্ট ক্যানসারের সম্ভাবনা কমায়। মায়ের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। বাচ্চার ব্রেন ডেভলপমেন্টে সাহায্য করে। বাচ্চার ডায়ারিয়াল ডিজিজ হয় না। সুতরাং যতদিন সম্ভব ছুটি নিয়ে বাচ্চাকে ফিডি  করান। কাজে জয়েন করলে বুকের দুধ বের করে নিয়ে ২-৩টি বোতলে ভাগ করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। মায়ের অনুপস্থিতিতে বোতলটি গরম জলের পাত্রে বসিয়ে গরম করে নিয়ে বাচ্চাকে দিতে পারেন। আবার অফিস বের হওয়ার আগে এবং অফিস থেকে ফিরে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ান। এতেও তার পেট না ভরলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *