চিরতরে প্রাকৃতিক ভাবে ব্রণ দূর করার উপায়
এই পৃথিবীর ৮০ পার্সেন্ট লোক যাদের বয়স কিনা ১৮ থেকে ২১ তারা পিম্পল বা বরণ এর সমস্যায় কোনো না কোনো দিন অবশ্যই স্বীকার হয়েছে। বরণ হওয়ার ব্যাপারটি টিনএজদের জন্য খুবই চিন্তা দায়ক। কারণ এই পিম্পল না বলে হঠাৎ করে চলে আসে। এবার হতে পারে যে আপনি কোন ডেটে যাবেন বা ইন্টারভিউ দিতে যাবেন, তখন এটি খুবই বোরিং ফিল করায়। এবার হতে পারে যে এর প্রভাব সামনের ব্যক্তির উপর পড়বে না। বাট এই পিম্পল এর কারণে আপনি নিজেকে কুৎসিত ভাবতে শুরু করে দেন। এবং আপনার সেল্ফ কনফিডেন্স তো একেবারেই শেষ হয়ে যায়। তো প্রশ্ন হল যে পিম্পল দূর করবো কিভাবে? আর একে দূর করার আদৌ কি কোন উপায় আছে?
আজকের এই পোস্টিং অনেক ইন্টারেস্টিং এবং ইউজফুল হতে চলেছে আপনার জন্য, তার পোস্টটির একটি লাইন কেউ মিস করবেন না।
বরণ হয় কেন?
তো দেখুন এটি হলো আমাদের ত্বকের সবথেকে উপরের লেয়ার। যেখানে বহু প্রকারের পুর থাকে আর এর মধ্যে থাকে সেলসিয়াস গ্ল্যান্ড যা এক প্রকারের রিলিজ করে, যাতে আমাদের আপার স্ক্রিন লেয়ার ময়েশ্চারাইজ থাকে। এবার যখন নোংরা ধুলোবালি এবং ডেড স্কিন সেলস এর কারণে পুর গুলো বন্ধ হয়ে যায়। তখন গ্ল্যান্ড থেকে রিলিজ হওয়া তেল বাইরে বের হতে পারে না। তখন সেই তেল এই পুরেই জমতে শুরু করে দেয়। এবার শরীরের কিছু ব্যাকটেরিয়া যারা স্ক্রিনের উপরে থাকে যারা এই তেল খেয়ে বেঁচে থাকে তারাই পুরে পৌঁছে যায় এবং এটিকে খেয়ে তারা আরও ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয় এবং নিজের বংশবিস্তার করতে শুরু করে।
এবার এই অয়েল স্কিন সেলস এবং ব্যাকটেরিয়া যখন স্কিনের বাইরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে তখন তো ব্ল্যাকহেড হয়ে যায়। ব্ল্যাকহেড মাটি বা ধুলাবালির কারণে কালো হয়না যে ডেট স্কিন সেল এর মিলনে এবং অক্সিজেনের রিঅ্যাকশনের কারণে ই কালো হয়ে যায়। কিন্তু যদি পুর বন্ধ থাকে তখন তাকে হোয়াইটহেড বলে। এইপুরের মধ্যে যখন ব্যাকটেরিয়া খুব বেশি হয়ে যায়, তখন রেড ব্লাড সেলস মানে লোহিত রক্তকণিকা সেখানে পৌঁছেই এই জায়গাকে ইনফিলিং করে দেয়। অর্থাৎ অবশ করে দেয়। এবং হোয়াইট ব্লাড সেলস মানে শ্বেত রক্তকণিকা এই ব্যাকটেরিয়াদের সাথে ফাইট করতে শুরু করে, যাতে ব্যাকটেরিয়া কে মারতে পারে।
তো এই সময়ে এই স্থানে ব্যথা বাড়তে শুরু করে এবং এই স্থানটি বরণ এ রূপান্তর হয়ে যায়।
তো চলুন এবার আমরা জানি যে এটি কি কারণের জন্য হয় এবং এর পরিমাণ বেশি হয়ে যায় কেন?
তো যত বেশি পুরে অয়েল রিলিজ হবে ততই বরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হবে। যদি আপনি বেশি মিষ্টিজাতীয় খাবার বা তেলে ভাজা খাবার খান অথবা হঠাৎ পেট ভরে খুব বেশি খাবার খান ,তখন এই গ্রান্ড গুলির অয়েল প্রোডাকশন বেড়ে যায়। এছাড়াও টেস্টোস্টেরন এবং hgh হিউম্যান গ্রোথ হরমোন বেশি রিলিজ হওয়ার ফলে ওয়েল প্রোডাকশন বেড়ে যায়। এজন্যেই ১১ থেকে ২১ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের স্বাভাবিকের থেকে বেশি বরণ হতে শুরু করে।
এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে চিন্তায় থাকার কারণেও ব্যক্তির মধ্যে করটিসল নামের স্ট্রেস হরমোন রিলিজ হতে শুরু করে, যার ফলেও এই তেলের প্রোডাকশন বেড়ে যায়। কম পানি পান করার ফলেও বরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাছাড়াও দীর্ঘ সময় ধরে কোন স্থানে বসে থাকার অভ্যাস আমাদের শরীরে দুটি স্ট্রেস হরমোন অ্যাড্রিনাল ট্রপিক হরমোন অর্থাৎ এসিটিএইচ। এবং ট্রফিক হরমোন অর্থাৎ সি আর এইচ এস কে বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে ইনফিলমিশন বাড়তে শুরু করে। এবং লাস্ট যদি আপনার ইমিউনিটি পাওয়ার কম থাকে তাহলে হোয়াইট ব্লাড সেলস বরণ এর ব্যাকটেরিয়া কে মারতে পারে না।
ভালো ডায়েট না থাকার কারণে এবং ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবের কারণে আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার উইক হয়ে যায়।
প্রশ্ন হল যে কিভাবে বরণ এবং ব্ল্যাকহেড থেকে মুক্তি পাব? মানে কি করব যাতে বরণ না হয়?
তো দেখুন বন্ধু আমি আপনাকে কোন ওষুধ বিক্রি করতে আসিনি, ওষুধ ও ক্রিম তো আপনি নিজেই কিনে ট্রাই করেছেন? আমি আপনাকে কিছু বেসিক রেমেডিস এর ব্যাপারে বলব যার দ্বারা আপনি এই বরণ থেকে পার্মানেন্টলি মুক্তি পেয়ে যাবেন।
- আপনি বেশি মিষ্টিজাতীয় খাবার কে খাওয়া বন্ধ করে দিন।
- বেশি ফ্যাট যুক্ত খাবার কে খাওয়া কমিয়ে দিন।
- হঠাৎ পেট ভরে বেশি খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন।
এবং দুধ ও কলা একসাথে খাবেন না কারণ সাইন্টিফিক স্টোর্স বলে এবং কলা একসাথে খেলে পাকস্থলীতে অবস্থিত বুট ব্যাকটেরিয়া ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। যার ফলে ইমিউন রেসপন্স কমে যায়। এছাড়াও বরণ কে কোনদিন ও জোর করে ফাটাবেন না। কারণ এটি করলে ওখানে আরো বেশি ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করবে। এবং ইনফেকশন বেড়ে যাবে।
বরণ বা ব্ল্যাকহেড এর এরিয়াতে আপনি দিনে একবার করে টি ট্রি অয়েল অর্থাৎ চা গাছের তেল লাগাতে পারেন। এই তেল ব্যাকটেরিয়াকে মারতে সাহায্য করে। আপনি স্যালিসিলিক এসিড এর ও ব্যবহার করতে পারেন। এটি ডেড স্কিন সেলস কে রিমুভ করতে সাহায্য করে, মার্কেটে একটি ক্রিম খুবই ফেমাস রয়েছে। যাকে বেনজয়েল পারঅক্সাইড বলা হয়। এই ক্রিমটি বরণ দূর করতে সাহায্য করে। তবে আমি বলব যে আপনি ডাক্তারের কাছ থেকে শুনে তবেই এই ক্রিমটি কে ব্যবহার করুন। নয়তো এই ক্রিমটি অনেক side-effects হতে পারে।
কিন্তু যদি আপনার জদি ব্রণের সমস্যা খুব বেশি হয়ে যায় তাহলে আপনি কোন মেডিসিন কে ব্যবহার না করে সরাসরি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
সর্বশেষ কথা:
তো পাঠক আপনিও কি কখনো এই ধরনের শিকার হয়েছেন! কমেন্ট বক্সে আমাকে অবশ্যই জানাবেন। পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর হ্যাঁ আমরা চেষ্টা করেছি এই এক পোষ্টের মাধ্যমেই আপনাদেরকে বরণ সম্পর্কে সবকিছু জানাতে। তাই যদি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে নিশ্চয়ই কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে বলবেন আমরা চেষ্টা করব আপনাকে রিপ্লাই করে সেটির সমাধান দেওয়ার।
দেখা হবে পরবর্তী কোনো ইন্টারেস্টিং আর্টিকেলে, সবার সাথে ততক্ষণ পর্যন্ত নিজের খেয়াল রাখুন ভালো থাকুন ধন্যবাদ।