ঘরোয়াভাবে চুল সোজা করার উপায়
ঘন কালো সুন্দর চুলের প্রশংসা কেনা শুনতে চাই? সবাই সিল্কি শাইনি ও সোজা ঝলমলে চুলের কাঙ্গাল। তাই অনেকেই বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি ও অনুসরণ করে থাকেন, আজকের পোস্টটিতে আমরাও চুল সিল্কি ও সোজা করার কিছু ঘরোয়া টিপস নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।
প্রথমত আমরা আলোচনা করব চুল সিল্কি ও সোজা করার উপায় গুলো কি কি ? চুল সোজা করার জন্য অনেকেই দামি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন। অনেকেই পার্লারে গিয়ে প্রচুর টাকা ব্যয় করে থাকেন, তবে আশানুরুপ ফল থেকে সবাই বঞ্চিত। ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপাদানে চুল সিল্কি ও সোজা করার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে চুল সিল্কি ও সোজা করার সহজ উপায় গুলো কি কি?
১.লেবু ও ভিটামিন ই:
চুলের যত্নে লেবু বেশ উপকারী, লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও সাইট্রিক এসিড যা চুলের পুষ্টি বজায় রেখে চুলকে সিল্কি করে তুলে। ভিটামিন ই চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে এবং চুল ঝরা রোধ করে এবং চুলকে করে তোলে ঘন। প্রথমে একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ রেগুলার সিম্ফনি এর মধ্যে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও আধা চামচ লেবুর রস নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এটি গোসলের সময় শ্যাম্পুর মতো মাথায় ব্যবহার করুন, চাইলেই হেয়ার প্যাক আপনি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার চুল নরম সিল্কি ও সোজা এবং ঝলমলে হয়ে যাবে।
২.পাকা কলা ও মধু:
চুল পড়া রোধ ও চুল সিল্কি করার সহজ উপায় হিসেবে পাকা কলা টনিকের মতো কাজ করে। পাকা কলা তে আছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট পটাশিয়াম ও ভিটামিন। এবং মধুতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে চুলকে ভেঙে যাওয়া থেকে রোধ করে।
প্রথমে একটি পাকা কলা ব্লেন্ড করে এর সাথে ২ চা চামচ মধু ও এক চামচ নারকেল তেল দিয়ে ভালো করে মিক্স করুন। চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত মিশ্রণটি ভালোভাবে লাগান। কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, সপ্তাহে দুইবার নিয়মিত প্যাকটি ব্যবহার করুন। এই প্যাকটি ব্যবহারই আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল সোজা ও সুন্দর হবে।
৩. অ্যালোভেরা ও টক দই:
চুলের যত্নে অ্যালোভেরা অত্যন্ত উপকারী, চুল সোজা করার উপায় হিসেবে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি। ৪ টেবিল-চামচ অ্যালোভেরা জেল, ৩ টেবিল চামচ টক দই এবং ২ টেবিল চামচ যেকোনো তেল একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এরপর প্যাক টি আধ ঘণ্টা লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে নিন। এতে আপনার চুল দ্রুত সিল্কি ও সোজা করে তুলবে।
৪. দই ও মেথি:
চুলের যত্নে মেথি বেশ কার্যকরী উপাদান, মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে মেথি বেটে নিন অথবা পরিমাণমতো মেথির গুঁড়া টক দই ও জলপাই তেল একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি মাথার ত্বক ও চুলের আগায় ও ঘুরাই ভালো মতো লাগিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন, এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এই পদ্ধতিটি আপনার মাথার চুলকানি দূর করবে এবং চুল সিল্কি ও সোজা করবে।
৫.হেয়ার সিরাম:
চুল সোজা ও সিল্কি করার জন্য হেয়ার সিরাম এর ব্যবহার অপরিহার্য। ঘরে বসেই সিরাম তৈরি করা যায় এবং চুল সিল্কি করতে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি। চা পাতা অ্যালোভেরা জেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে সিরাম তৈরি করা যায়। প্রথমেই আধা কাপ পানিতে ২ চামচ চা পাতা দিয়ে ৩০ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। এরপর চায়ের লিকারের মধ্যে ২ চামচ অ্যালোভেরা জেল ও দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে তৈরি করে নিন পারফেক্ট হেয়ার সিরাম। হেয়ার সিরাম টি একটি স্প্রে বোতলে ঢেলে দিতে হবে, চুল শ্যাম্পু করার পর শুকিয়ে নিয়ে হেয়ার সিরাম চুলে স্প্রে করতে হবে। সিরাম টি ব্যবহারের পর চুল ধোয়ার প্রয়োজন নেই। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুল সিল্কি ও সাইনি হয়ে যাবে
৬.ডিম ও টকদই:
ডিম এবং টক দই চুলের যত্নে অত্যন্ত উপকারী, চুল সিল্কি ও সোজা করার উপায় হিসাবে টক দই ও ডিম দারুন কার্যকরী। ২ টি ডিমের সাদা অংশ নিন সাথে টক দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এরপর চুলে লাগিয়ে আধঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্যাকটি কয়েকদিন ব্যবহারেই আপনার চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে সিল্কি ও সুন্দর।
৭. চুলের যত্নে ভিনেগার:
চুল সিল্কি করার জন্য ভিনেগার দারুণ উপকারী, এটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং চুল সিল্কি হয়ে উঠবে খুব তাড়াতাড়ি। এক চা-চামচ সাদা ভিনেগারের সাথে এক মগ পানি ও নারিকেল তেল হালকা গরম করে পরিমাণমতো নিতে হবে। এরপর তিনটি উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি হালকা গরম করে নিতে হবে , এরপর এটি চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে লাগান এবং ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবং পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
শেষ কথা:-
তো পাঠক এই ছিল আমাদের আজকের আয়োজন আশা করছি এই পোস্টটি পড়ে আপনি আপনার বাঁকা চুল সোজা করতে পারবেন। এই ছয়টি উপায় এর মধ্যে কোন উপায়টি আপনি করবেন বলে ঠিক করেছেন তা কমেন্ট সেকশনে জানাতে ভুলবেন না। আর আপনি যদি এমনই আনকমন ইন্টারেস্টিং ও হেল্পফুল পোস্ট পছন্দ করেন তাহলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে ততক্ষণ নিজের খেয়াল রাখুন ভালো থাকুন ধন্যবাদ।