Information

চুলের আগা ফেটে গেলে কি করণীয়

চুলের আগা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায়

চুলের আগা ফেটে গেলে করণীয় কি! যেহেতু এই শীতে চুলের সমস্যা একটু বেশিই দেখা দেয়, আর সারা বছরই চুলের কোনো না কোনো সমস্যা লেগেই থাকে, তাই অনেকেই এ ব্যাপারে সবচেয়ে কার্যকরী উপায়টাই জানতে চান। তাই আজকের নিবন্ধে আমরা জানাবো– চুলের আগা ফেটে গেলে করণীয় কাজ কি কি এবং চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধের উপায়। সেই সাথে আপনি চাইলে আরও জানতে পড়তে পারেন– লেবু দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় এবং প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর টেকনিক সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত। 

চুলের আগা ফেটে গেলে করণীয় কাজ কি?

চুলের আগা ফেটে গেলে সর্বপ্রথম করণীয় কাজ হচ্ছে – ফেটে যাওয়া অংশটুকু সুন্দর করে কেটে ফেলা। অনেকেই বলে থাকেন চুলের বিভিন্ন প্যাক, দামি শ্যাম্পু, সাবান অথবা বিভিন্ন সিরাম ব্যবহার করলে চুলের আগা ফাটা ঠিক হয়ে যায়। 

কিন্তু আপনি যদি খুব তাড়াতাড়ি একদম পুরোপুরি ভাবে আগা-ফাটা দূর করতে চান তাহলে, আপনার চুলের আগা ফেটে গেলে করণীয় কাজ হবে– চুলের আগা গুলো একবার কেটে ফেলে, অতঃপর আলাদা যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে তা স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনা। 

আমরা মূলত ধারাবাহিকভাবে এ পর্যায়ে জানাবো– আগাফাটা চুলের যত্ন নেওয়ার নিয়ম, স্বাভাবিক সচেতনতা, খাদ্যদ্রব্য, চুলের আগা ফাটা দূরীকরণ এ করণীয় কাজ এবং পরিত্যক্ত কাজ সমূহ সম্পর্কে খুঁটিনাটি। সেই সাথে চুলের আগা ফাটা দূর করতে ঘরোয়া সমাধান হিসেবে প্রাকৃতিক কিছু উপায়সমূহ নিয়ে বিস্তারিত।

আগাফাটা চুলের যত্ন নেওয়ার নিয়ম

আগা ফাটা চুলের যত নেওয়ার নিয়ম হচ্ছে– যে চুলগুলো ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেগুলো বেছে বেছে কেটে ফেলা। অতঃপর চুলে নিয়মিত তেল ব্যবহার করা। আমার সাধারণত কাজের ব্যস্ততায় অথবা ভালো না লাগার কারণে চুলে খুব বেশি তেল ব্যবহার করি না। কিন্তু চুলের আগা ফাটার সবচেয়ে কার্যকরী সমাধান হচ্ছে “তেল”। 

কেননা তেল চুলে পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে। আর আপনি যদি চুলের স্বাস্থ্য ঠিকঠাক রাখতে চান এবং আগা ফাটা চুলের যত্ন নিতে চান তাহলে “চুলের পুষ্টি হিসেবে অবশ্যই তেলের যোগান দিতে হবে”। আর নিয়মিত তেল ব্যবহার করলে তবেই না আপনার আগা ফাটা চুলের সমাধান মিলবে। কিন্তু চুলের আগা ফাটা দূরীকরণে আরো জানতে হবে চুলের আগা ফেটে যাওয়ার কারণ কি কি!

কেননা আপনি যদি যেকোনো সমস্যার কারণগুলো জানতে পারেন তাহলে সেগুলো এভোয়েড করতে পারবেন বা তার সমাধানের চেষ্টা করবেন আর তবেই না আপনার আশানুরূপ ফলাফল মিলবে। তো আসুন, চুলের আগা ফাটার কারণ সমূহ সম্পর্কে জেনে নেই এবং সেগুলোর সমাধানের চেষ্টা করার মাধ্যমে চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করি। 

চুলের আগা ফাটার কারণ |চুলের আগা ফেটে যায় কেন?

সাধারণত বেশ কয়েকটি কারণে চুল খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এবং চুলের আগা ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। যথা—

  • অতিরিক্ত রুক্ষতা
  • অতিরিক্ত পরিমাণে চুল আঁচড়ানো
  • প্রচুর পরিমাণে চুলে ময়লা জমে থাকা
  • চুলে পুষ্টির অভাব
  • নির্দিষ্ট সময় পর পর চুলের আগা না কাটা
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা এবং সুষম খাবার না খাওয়া
  • চুল সবসময় অগোছালো করে রাখা এবং তেল ব্যবহার না করা। 

অতএব, আপনি যদি আপনার চুল সুন্দর, ঘন, উজ্জ্বল রাখতে চান এবং চুলের আগা ফেটে গেলে সেটা পূর্বের অবস্থায় নিয়ে আসতে চান তাহলে এখনই চুলের আগা ফাটার কারণগুলো মাথায় রেখে সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে। 

মানে আপনার চুল অতিরিক্ত পরিমাণে রুক্ষ থাকলে বিভিন্ন শ্যাম্পু সাবান বা সিরাম ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলের রক্ষতা দূর করতে হবে, চুলের পুষ্টির যোগান দিতে হবে এবং সব সময় চুলের গোড়া যাতে পরিষ্কার থাকে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে চুল আস্রানো যাবেনা সেই সাথে সঠিক নিয়ম মেনে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাঁটি তেল ব্যবহার করতে হবে। 

আর হ্যাঁ, চুল সুন্দর রাখতে চাইলে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি বিশেষ কিছু সচেতনতা অবলম্বন করা জরুরী। এ কারণে আমরা স্বাভাবিক সচেতনতা এবং খাদ্যদ্রব্য এই দুটি বিষয়ে আলোচনা করব। এমন কিছু টিপস দেওয়ার চেষ্টা করব যেগুলো শুধুমাত্র চুলের আগা-ফাটা দূর করবে এমন নয় বরং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও খুবই সহযোগিতা করবে। 

চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে স্বাভাবিক সচেতনতা

আমরা অনেকেই রয়েছি যারা শুধুমাত্র সুন্দর চুল কামনা করি কিন্তু চুলকে সুন্দর রাখার একদমই চেষ্টা করি না। চুল সুন্দর না থাকার পেছনে সাধারণ কিছু কারণ থাকে। আর এই সাধারণ কারণে চুল পড়ে যায় বলে সে কারণগুলোকে আমরা খুব একটা গুরুতর ভাবে নেই না। যেমন স্নান করার পর গামছা বা তোয়ালে দিয়ে চুল জোরে জোরে বাড়ি দেওয়া, স্নানের পরবর্তীতেই চুল জোরে জোরে আচরানো ইত্যাদি এই কারণগুলো চুলের স্বাস্থ্য নষ্ট করতে বেশ কার্যকরী। 

কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখবেন এগুলো আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক একটি কার্যকলাপ এ পরিণত হয়েছে। এতে করে যে আমাদের চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে তা আমরা কখনো চিন্তাও করি না। এছাড়াও চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার পেছনে বা চুলের আগা ফেটে যাওয়ার পেছনে আরো যেসব কারণ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে– চুলে সঠিক পদ্ধতিতে তেল ম্যাসাজ না করা এমনকি সঠিক নিয়মে চুল না আঁচড়ানো। 

এ কারণে চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে আমরা স্বাভাবিক সচেতনতা অবলম্বনের জন্য কিছু বিষয় জানাবো। যেগুলো আপনাদের কাজে লাগবে। 

✓ অধৈর্য হয়ে চুল আচড়ানো চলবেনা।  যদি কোনো কারণে জ্বর পেকে যায় তাহলে তেল বা কোন ক্রিম দিয়ে জট ছাড়িয়ে নিতে হবে অতঃপর হালকাভাবে চুল আঁচড়াতে হবে। যাতে করে গোড়ায় অতিরিক্ত পরিমাণে চাপ না লাগে। 

✓ চুল অবশ্যই টেনে ছিড়া যাবেনা। এতে করে চুলের গোড়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

✓ চুলের গোড়ায় অর্থাৎ মাথাতে কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে গরম পানি ঢালা উচিত নয়। এতে করে চুল ঝরে পড়ে এবং চুলের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে খারাপ হয়। তাই শীতকালে গোসল দেওয়ার ক্ষেত্রে এ বিষয়টা সচেতনতার সাথে মানতে হবে।

✓ মাঝে মাঝে চলে কিছু হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে হবে, এতে করে চুল তার পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারবে এবং জট কম বাধার বিষয়ে সাহায্য হবে

✓ অবশ্যই আগা ফাটা প্রতিরোধ করতে চাইলে চুলের নিয়মিত তেল মালিশ করতে হবে। এ সময় অবশ্যই

  • অতিরিক্ত গরম তেল মাথায় ব্যবহার করা যাবে না
  • খুবই আলতোভাবে তেল ম্যাসাজ করতে হবে
  • পাশাপাশি চুল আঁচড়িয়ে অতঃপর তেল দিতে হবে
  • খুব টাইট করে চুল বাধা যাবে না এমনকি লং টাইম ধরে চুলের তেল দিয়ে রাখাও চলবে না।

আপনি যদি চুলের সমস্যা বা চুলের আগা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই দিনগুলো নজরে রাখতে হবে এবং সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।  তাই চুলে সঠিক নিয়মে তেল ব্যবহার করুন পাশাপাশি চুল কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে সঠিক প্রক্রিয়ায় আচরে নিন। 

চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে খাদ্য | চুলের আগা ভাঙ্গা রোধ

শুধুমাত্র চুলে নিয়মিত তেল মালিশ করে এবং সঠিক নিয়মে চুল আঁচড়ে এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ কিছু খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আপনি চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করতে পারেন। কেননা চুল ফেটে যাওয়ার একটি অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পুষ্টির অভাব। যে সকল পুষ্টির অভাবে চুল ঝরে পড়ে এবং চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় আপনি যদি ওই পুষ্টির চাহিদাগুলো খাদ্য খাওয়ার মাধ্যমে পূরণ করে ফেলেন তাহলে তো এই সমস্যার আগমনই ঘটবে না। 

এ কারণে আলোচনার এ পর্যায়ে চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে খাদ্য কিভাবে আপনাকে সহযোগিতা করতে পারে এবং খাদ্য তালিকায় ঠিক কোন কোন খাদ্যগুলো বেশি পরিমাণে রাখতে হবে সে ব্যাপারেই ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। সাধারণত আমাদের মাথার চুল ঝরে পড়ার পেছনে প্রোটিন দায়ী। যখন প্রোটিনের অভাব ঘটে তখন আমাদের চুল অনেক বেশি মলিন হয়ে যায় তাই চুলের আগাফাটার সমস্যাটাও অনেক বেশি বেড়ে যায়। 

এর জন্য একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় এমন খাবার রাখতে হবে যেগুলো প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করবে। যেমন ধরুন

  • ডিম
  • দুধ
  • মাছ মাংস সহ প্রভৃতি।

এর পাশাপাশি অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। মিনারেল এর ঘাটতি পূরণ করতে হবে চাইলে মিনারেল সমৃদ্ধ ভিটামিন খেতে পারেন যেমন সুপারভিড এম ক্যাপসুল। মনে রাখবেন এই ওষুধটি কিন্তু প্রতিদিন একটা করে প্রায় দুই থেকে তিন মাস খেতে হয়। আর এটা তো আমরা সবাই জানি যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলের জন্য অত্যন্ত ভালো ও উপকারী। তাই এটি আপনি খাওয়ার মাধ্যমেও চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারবেন। 

তবে সত্যি এটাই আপনি যদি সুন্দর একটা লাইফ স্টাইল মেইনটেইন করে চলেন। আপনার বয়সের সাথে দৈহিক ওজন এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে আপনার স্বাস্থ্য যেমন পারফেক্ট থাকবে ঠিক একইভাবে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য অনেক বেশি সুন্দর দেখাবে। এর জন্য খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন নিয়ে আসুন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান পরিমিত পরিমাণে পানি পান করুন পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতন লাইফ মেইনটেইন করে চলুন। 

চুলের আগা ফাটা রোধ করার ঘরোয়া উপায় | আগা ফাটা চুলের ঘরোয়া যত্ন

সত্যি বলতে আপনি যদি সুস্থ ও ভালো থাকতে চান তাহলে যত বেশি ন্যাচারাল থাকা যায় ততই ভালো।  আমরা ইতিমধ্যে আপনাদের যে টিপস গুলো সাজেস্ট করেছি যদি এগুলো মাথায় রাখেন তাহলেই চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ইনশাআল্লাহ। তবুও আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা চুলের আগা ফাটা রোধ করার ঘরোয়া কিছু উপায় হিসেবে আরো কিছু কলাকৌশল সম্পর্কে জানাবো। 

আপনি মূলত নিয়মিত কিছু হেয়ার প্যাক বাড়িতেই তৈরি করে নিয়মিত ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলের আগা ফাটা দূর করতে পারবেন। সবচেয়ে কার্যকরী কিছু হেয়ার প্যাক সাজেস্ট করব এ পর্যায়ে। 

চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে ডিমের হেয়ার মাস্ক: আপনি যদি খুব দ্রুত চুলের আগা ফাটার সমস্যা ঠিক করতে চান অথবা প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে চান তাহলে সপ্তাহে অন্তত একদিন ডিমের হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন। এর জন্য আপনাকে দুই চামচ অলিভ অয়েল এবং দুই চামচ আমন্ড অয়েল একটি ডিমের সঙ্গে মেশাতে হবে। অতঃপর সেটা ৩০ থেকে ৪০ মিনিট মাথায় ভালোভাবে মাখিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। এতে আপনি চুলের আদ্রতা ঠিক রাখতে পারবেন এবং চুলে বাড়তি একটি উজ্জ্বলতা অনুধাবন করতে পারবেন। 

চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে মধুর ব্যবহার: ত্বকের যত্নে মধুর উপকারিতার কথা আমাদের কারোরই অজানা নয়। কিন্তু চুলের যত্নেও যে মধু ব্যবহার করা যায় সেটা আবার আমরা অনেকেই জানিনা। আপনি যদি চুল ভালো রাখতে চান এবং চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করতে চান তাহলে আজি মধু ব্যবহার করুন। এজন্য আপনার তিনটি উপকরণ লাগবে। সেগুলো হচ্ছে মধু, অলিভ অয়েল এবং টক দই। এই তিনটি উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে একটি হিয়ার মাস্ক তৈরি করে ভালোভাবে চুলে লাগাতে হবে এবং আধাঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত রেখে শ্যাম্পু করতে হবে। ব্যাস আপনি নিজেই এর জাদুকরি উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারবেন। 

চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধে অ্যালোভেরার ব্যবহার: এলোভেরাও ত্বকের যত্নে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়। আবার চুলের যত্নেও অ্যালোভেরা ভীষণ কার্যকরী। আমরাই তো মধ্যে জেনেছি যে চুলের আগা ফেটে যাওয়ার কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত পরিমাণে রুক্ষতা। কিন্তু যে অ্যালোভেরা জেল নিয়মিত চুলে ব্যবহার করবে তার চুলের রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব খুব দ্রুত দূর হয়ে যাবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে চুলের আগা ফাটার সমস্যা অবশ্যই ঠিক হবে যদি কেউ এলোভেরার ব্যবহার করে থাকে। 

তাই এলোভেরার পাতা থেকে পরিমাণ মতো জেল বের করে নিয়ে সেটা সপ্তাহে অন্তত দুই দিন চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। অতঃপর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে এক মাস নিজের মাথায় এলোভেরার ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি অনুধাবন করতে পারবেন যে আপনার আগা-ফাটার সমস্যা ঠিক হয়ে গিয়েছে। 

চুলের আগা ফেটে গেলে করণীয় ও বর্জনীয় কাজ সমূহ

চুলের আগা ফেটে গেলে কি করবেন এবং কি কি করবেন না, সেটা বোঝার সুবিধার্থে আমরা এবার চার্ট আকারে সংযুক্ত করছি। আশা করি হাতেগোনা এই তিন চারটি বিষয় মেনে চললেই আপনার চুলের আগা ফাটার সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। যথা —

মেনে চলুন এড়িয়ে চলুন
চুলের আগাফাটা শুরু হলে অন্য কোন শ্যাম্পু ব্যবহার না করে বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। কেননা চুল খুবই নাজুক। আর এই সময় যদি আপনি বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তাহলে উপকার মিলবে। চুল ঘনঘন আস্রাবেন না। গোসল করার পর চুল শুকিয়ে যাওয়ার পরবর্তীতে হালকাভাবে আচড়ে নেবেন, খেয়াল রাখবেন যাতে চুলের গোড়ায় অতিরিক্ত টান না লাগে
জিনগত বা হরমোনার কারণে যদি চুলের আগা ফেটে যায় তাহলে ঘন ঘন চুল কাটবেন অর্থাৎ ছাটিয়ে নেবেন রাতে চুল আলগা রেখে শোবেন না। চেষ্টা করবেন অনবরত যাতে বালিশের সাথে চুল ঘষা না লাগে। এর জন্য ফিতা দিয়ে বা রাবার দিয়ে চুল বেঁধে নেওয়া টাই সর্বোত্তম। 
প্রতিরাতে সম্ভব হলে পালমার্স হেয়ার ট্রিটমেন্ট ফর্মুলা ব্যবহার করবেন। এতে করে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং চুলের আগা ফাটা সমস্যা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। চুলে ঘন ঘন হেয়ার ড্রায়ার ও অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার না করার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন যত বেশি ন্যাচারাল থাকা যায় ততই ভালো। 
সব সময় স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করে চলবেন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করবেন না সেইসাথে অনিয়মিত লাইফ স্টাইল ছেড়ে সুন্দর লাইফ স্টাইল মেইনটেইন করে চলার চেষ্টা করবেন।

তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, চুলের আগা ফেটে গেলে করণীয় কি, এ সম্পর্কিত আলোচনায় আমরা যে ইনফরমেশন গুলো সংযুক্ত করেছি আশা করছি তার সবটাই আপনাদের উপকারে আসবে। তো এখন আসুন আলোচনার শেষ পর্যায়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর জেনে আলোচনার সমাপ্তি জানা যাক। 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন সমূহ

১. চুলের আগা কাটার নিয়ম কি?

✓চুল ছাটার উপযুক্ত সময় বুঝতে পারলেই যে কেউ চুলের আগা সঠিকভাবে কাটতে পারবেন। যখন আপনার চুলের আগা অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যাবে এবং দুই একটা করে আগা ফেটে যাবে ঠিক সেই সময় চুলের আগাগুলো কেচি দিয়ে কেটে ফেলাটা সর্বোত্তম। এতে করে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে এবং চুলের আগা ফাটার সমস্যা টা অনেক গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছায় না। 

২. চুলের রুক্ষতা দূর করার উপায় কি?

বিভিন্ন কারণে চুল রুক্ষ হয়ে পড়ে। আপনি যদি চুলের অন্যান্য যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত এলোভেরার হিয়ার মাস্ক ব্যবহার করেন তাহলে চুলের রুক্ষতা দূর হয়ে যাবে। 

৩. চুলের আগা মোটা করার উপায় কি?

✓চুলের আগা মোটা করার উপায় জানতে চান অনেকেই। সত্যি বলতে চুলের আগা মোটা করার তেমন কোন নির্দিষ্ট উপায় বলা যাচ্ছে না তবে আপনি যদি চুলের স্বাস্থ্য ঠিকঠাক রাখতে চান তাহলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে খাঁটি তেল ব্যবহার করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি চুলের এক্সট্রা কেয়ার করতে হবে। 

৪. চুলের বাড়তি যত্ন নিতে কি কি করা জরুরি?

চুলের বাড়তি যত্ন নিতে

  • নিয়মিত চুল ব্রাশ করতে হবে এবং হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে
  • প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে
  • রুক্ষ চুলে শ্যাম্পু করার অন্তত ১ ঘন্টা আগে তেল লাগাতে হবে
  • চুল প্রতিদিন 50 থেকে 100 বার ব্রাশ করতে হবে নিয়ম মেনে। 
  • পাশাপাশি চুলে জেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়াও আরো কিছু বিষয় আমরা আমাদের আলোচনায় ইতিমধ্যে তুলে ধরেছি আশা করছি চুলের যত্ন নিতে কি কি করা জরুরী সেটা আপনাদের বোধগম্য হয়েছে। 

৫. চুলের আগা ফেটে গেলে সেগুলো কি কাটতে হয়?

হ্যাঁ চুলের আগা ফেটে গেলে অবশ্যই ওই ফেটে যাওয়া আগাগুলো কেটে অতঃপর চুলের যত্ন নিয়ে চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি করা যায়। অতএব চুলের আগা ফেটে গেলে অবশ্যই চুল কাটতে হয় 

৬. সঠিক নিয়মে চুল আঁচরাবো কিভাবে?

সঠিক নিয়মে চুল আঁচড়ানোর জন্য প্রথমত চুলে কোন ভালো সিরাম অথবা তেল ব্যবহার করতে হবে। অতঃপর চলে যদি জট পেকে থাকে তাহলে সেই জটগুলো ছাড়ানোর পরবর্তীতে পুরো চুল আঁচড়াতে হবে। মূলত চুল সঠিক নিয়মে আচরানোর এটাই মেইন উদ্দেশ্য যাতে করে চুলের সাথে টানা হেঁচড়া না করা হয় এবং চুলের গোরাতে অনেক বেশি আঘাত না লাগে। ব্যাস এতটুকুই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *