Information

ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা এবং ব্যবহারের নিয়ম

ক্যাস্টর অয়েল

সুন্দর চুল নারীদের সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে। তাই প্রত্যেকেই চায় কালো-ঝলমলে-উজ্জ্বল সিল্কি চুল। কিন্তু চুল ঝরে পড়ার সমস্যায় সবাই কমবেশি অতিষ্ঠ। এ কারণেই আজ আমরা জানবো, ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম। কেননা ক্যাস্টর অয়েল চুলের যত্নে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। 

আর আপনি যদি ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম জেনে সঠিক মাত্রায়, সঠিক প্রক্রিয়ায় নিয়মিত ম্যাসাজ করেন তাহলে চুল ঝরে পড়ার সমস্যা থেকে শীঘ্রই মুক্তি মিলবে। সেই সাথে পাবেন হাজারো উপকার। তাহলে আসুন জেনে নেই ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে খুঁটিনাটি।

ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম

ক্যাস্টর অয়েল সাধারণত অন্যান্য তেলের তুলনায় কিছুটা আলাদা এবং অনেকটাই দামি। দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই এই তেলটি ব্যবহার করতে চান না। সেক্ষেত্রে আপনি যদি যেকোনো সাধারণ হেয়ার অয়েল অথবা নিয়মিত যে তেলটি মাথায় ব্যবহার করছেন তার সঙ্গে সামান্য ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন তাহলেও দারুণ উপকার পাবেন। 

এছাড়াও এই তেলটি সাধারণত অন্য আরেকটি তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলে ব্যবহারের পক্ষে সুবিধা হয়। কেননা তেলটি ব্যবহারে চুল অনেক বেশি চিটচিটে হয়ে যায়। চিটচিটে ভাবের কারণে সঙ্গে সঙ্গে শ্যাম্পু করারও প্রয়োজন পড়ে। আমরা মূলত পুরো প্রসেসটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আর সেটা জানতেই করে ফেলুন আর্টিকেলের পরবর্তী অংশ।

✓ সাধারণ নারকেল তেল এবং ক্যাস্টর অয়েল

পরিমাণ মতো নারকেল তেল নিয়ে তার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে নারকেল তেল সামান্য গরম করে নিতে হবে এবং মিশ্রিত তেলটি প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভালোভাবে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করতে হবে। অতঃপর ৩০ মিনিট বা একঘন্টা সময় তেলটি মাথায় রাখার পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। আর হ্যাঁ, সম্পূর্ণ উপকার পেতে অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

✓ এসেনসিয়াল ওয়েলের সাথে ক্যাস্টর অয়েল

একইভাবে এসেন্সিয়াল অয়েল পরিমাণ মত নিয়ে তাতে কয়েক ফোটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় যেটা আমরা ইতিমধ্যে উল্লেখ করেছি। অতঃপর ৩০ মিনিট অথবা এক ঘণ্টা সময় রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে কন্ডিশনার ব্যবহার করে নেবেন। 

আর অবশ্যই যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন ক্যাস্টর অয়েল খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করবার। কেননা এইতো অনেক বেশি চিটচিটে হওয়ার কারণে কিছুটা অস্বস্তিকর অনুভূতি যোগায়। তবে আপনি যদি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান এবং চুলের ভালোর কথা চিন্তা করেন তাহলে এইটুকু কষ্ট করতেই হবে। 

তো এখন আসুন জেনে নেই, ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারে কি কি উপকার পাওয়া যায় এবং এতে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় এমন কোন কোন উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। পাশাপাশি চুল পড়া রোধে ক্যাস্টর অয়েল কিভাবে সাহায্য করে, নতুন চুল গজাতে ক্যাস্টর অয়েল কিভাবে সাহায্য করে এবং ক্যাস্টর অয়েল দিয়ে তৈরি কৃত কিছু হেয়ার মাস্ক সম্পর্কে আরো বিস্তারিত।

ক্যাস্টর অয়েল এর ১০ টি উপকারিতা

১. চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে

ক্যাস্টর অয়েলের প্রধান উপকারিতা হল চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করা। ক্যাস্টর অয়েলে থাকা রাইসিনোলিক অ্যাসিড রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যা চুলের ফলিকলকে পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। ফলে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হয়।

 

২. চুলের ক্ষতি রোধ করে

ক্যাস্টর অয়েল চুলের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলি চুলের ফলিকলগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে যা চুলকে ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।

 

৩. খুশকি দূর করে

ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি খুশকির কারণ হতে পারে এমন ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলে। এটি চুলের স্ক্যাল্পকে আর্দ্র রাখতেও সাহায্য করে যা খুশকির ঝুঁকি কমায়।

 

৪. ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে

ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো ত্বকের কোষগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

 

৫. ত্বকের ক্ষত নিরাময় করে

ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে সাহায্য করে। ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো ত্বকের ক্ষতগুলিকে দ্রুত নিরাময় করতে সাহায্য করে।

 

৬. ব্রণ কমায়

ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ততাও কমাতে সাহায্য করে যা ব্রণের ঝুঁকি কমায়।

 

৭. মেকআপ অপসারণ করে

ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের সাথে মিশে যায় যা মেকআপকে ত্বক থেকে আলাদা করে তোলে। এটি মেকআপের সবচেয়ে কঠিন দাগগুলোও অপসারণ করতে পারে।

 

৮. চোখের পাপড়ি বাড়ায়

ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য চোখের পাপড়ির গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে চোখের পাপড়ি বৃদ্ধি পায়।

 

৯. চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে

ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান চোখের নিচের ত্বকের কোষগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তরল বের করে দিতেও সাহায্য করে যা চোখের নিচের কালো দাগ কমাতে সাহায্য করে।

 

১০. ঠোঁট নরম করে

ক্যাস্টর অয়েল ঠোঁট নরম করে। ক্যাস্টর অয়েলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানগুলো ঠোঁটের কোষগুলোকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি ঠোঁটের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে যা ঠোঁটকে রুক্ষ হওয়া থেকে রক্ষা করে।

নতুন চুল গজানো তে ক্যাস্টর অয়েল এর ব্যবহার

যাদের চুল অতিরিক্ত ঝরে পড়ছে এবং নতুন চুল গজাচ্ছে না তাদের জন্য ক্যাস্টর অয়েল হতে পারে আদর্শ হেয়ার অয়েল। এক্ষেত্রে আপনি এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল। সেই সাথে আর মেশান 2 টেবিল চামচ আমন্ড অয়েল ও তিলের তেল। অতঃপর এই চার ধরনের তেল ভালোভাবে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে মালিশ করুন। 

তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি সবগুলো তেল একসঙ্গে মেশানোর পর হালকা কুসুম গরম করে নিতে পারেন। অতঃপর এক ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন এবং অবশ্যই মাথায় ব্যবহার করুন নিয়মিত ব্যবহার্য কন্ডিশনার। এতে করে আপনি এক সপ্তাহের মধ্যেই বুঝতে পারবেন যে আপনার মাথায় নতুন চুল গজাচ্ছে এবং এটাও প্রমাণিত হবে ক্যাস্টর অয়েল এর জাদুকরি ক্যালমা। 

ক্যাস্টর অয়েল এর হেয়ার মাস্ক

যারা চুলের যত্নে অনেকটাই সময় ব্যয় করেন তাদের জন্য জেনে রাখা জরুরী যে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করে দারুন একটি এয়ার মাস্ক তৈরি করা সম্ভব। এর জন্য কি কি উপকরণের প্রয়োজন এবং কি প্রক্রিয়ায় হিয়ার মাস্কটি তৈরি করতে হবে তা জানতে পড়তে থাকুন আর্টিকেলের পরবর্তী অংশ। 

ক্যাস্টর অয়েল এর হেয়ার মাস্ক-১

উপকরণ: মধু, একটি ডিম, ক্যাস্টর অয়েল

তৈরি ও ব্যবহারের প্রক্রিয়া: প্রথমত একটি পাত্রে একটি ডিম ভেঙ্গে নিন, অতঃপর তাতে এক চা চামচ মধু দিন আর আরো অ্যাড করুন দুই চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল। এরপর এই তিনটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে মাথায় লাগান। কমপক্ষে এক ঘন্টা রাখার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে। নিজেই দেখতে পাবেন এর উপকার। 

ক্যাস্টর অয়েল এর হেয়ার মাস্ক-২

উপকরণ: তিলের তেল, অলিভ অয়েল এবং ক্যাস্টর অয়েল

তৈরি ও ব্যবহারের প্রক্রিয়া: মূলত এই তিন ধরনের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করাটাই হচ্ছে কাজ। অতএব সমান পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল তেলের তেল এবং অলিভ অয়েল একটি পাত্রে নিয়ে সেটা ভালোভাবে চুলে মালিশ করুন। অতঃপর ৩০ মিনিট কিংবা তার অধিক সময় রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এক সপ্তাহ কিংবা দুই সপ্তাহের মধ্যেই দেখতে পাবেন আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং আরো কিছু উপকার। 

 

ক্যাস্টর অয়েল মুখে ব্যবহারের নিয়ম

ক্যাস্টর অয়েল মুখে ব্যবহারের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে, ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

 

ক্যাস্টর অয়েল মুখে ব্যবহারের আগে:

  • ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করার আগে এটি আপনার ত্বকে কোনও অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া ঘটায় কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য একটি ছোট জায়গায় পরীক্ষা করুন।
  • ক্যাস্টর অয়েল খুব ঘন হতে পারে তাই আপনি এটি অন্য তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

 

ক্যাস্টর অয়েল মুখে ব্যবহারের উপায়:

  • মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখতে: আপনার মুখের শুষ্ক অংশে ক্যাস্টর অয়েল লাগান এবং ৫-১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। আপনার ত্বক শুকিয়ে গেলে একটি ময়েশ্চারাইজার লাগান।
  • ত্বকের ক্ষত নিরাময় করতে: আপনার ত্বকের ক্ষত বা পোড়া অংশে ক্যাস্টর অয়েল লাগান। একটি পরিষ্কার ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষত বা পোড়া ঢেকে রাখুন।
  • ব্রণ কমাতে: আপনার ত্বকের ব্রণযুক্ত এলাকায় ক্যাস্টর অয়েল লাগান। একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে অয়েল মুছে ফেলুন।

 

ক্যাস্টর অয়েল মুখে ব্যবহারের কিছু টিপস:

  • ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করার আগে আপনার মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • ক্যাস্টর অয়েল লাগানোর আগে আপনার হাত ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • ক্যাস্টর অয়েল লাগানোর পর আপনার মুখের চারপাশের চোখ, ঠোঁট এবং নাকের চারপাশে লাগানোর সাবধানতা অবলম্বন করুন।
  • আপনি যদি ক্যাস্টর অয়েলের গন্ধ সহ্য করতে না পারেন তবে আপনি এটি ব্যবহার করার আগে এটি দিয়ে একটি সুগন্ধি তেল মিশিয়ে নিতে পারেন।

 

ক্যাস্টর অয়েল মুখে ব্যবহারের অসুবিধা:

  • ক্যাস্টর অয়েল খুব ঘন হতে পারে তাই এটি ব্যবহার করার সময় ত্বকে ছড়িয়ে দিতে কিছুটা কষ্ট হতে পারে।
  • ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করার পরে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলার জন্য আপনাকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

 

ক্যাস্টর অয়েল মুখে ব্যবহারের সময় সাবধানতা:

  • আপনি যদি ত্বকের কোনও সংক্রমণ বা রোগে ভুগছেন তবে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
  • আপনি যদি ক্যাস্টর অয়েলের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে ব্যবহার বন্ধ করুন এবং আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

ক্যাস্টর অয়েলের ফেসপ্যাক

এখানে কয়েকটি ক্যাস্টর অয়েল ফেসপ্যাকের রেসিপি দেওয়া হলো:

১. ব্রণ দূর করার জন্য ফেসপ্যাক

  • ১ চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল
  • ১ চা চামচ মধু

কীভাবে ব্যবহার করবেন:

  • একটি বাটিতে ক্যাস্টর অয়েল এবং মধু একসাথে মিশিয়ে নিন।
  • আপনার মুখে এবং ঘাড়ে মিশ্রণটি লাগান।
  • ১০-১৫ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন।
  • মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

২. ত্বককে উজ্জ্বল করার জন্য ফেসপ্যাক

  • ১ চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল
  • ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া
  • ১ চা চামচ ওটমিল

কীভাবে ব্যবহার করবেন:

  • একটি বাটিতে ক্যাস্টর অয়েল, হলুদ গুঁড়া এবং ওটমিল একসাথে মিশিয়ে নিন।
  • আপনার মুখে এবং ঘাড়ে মিশ্রণটি লাগান।
  • ১৫-২০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন।
  • মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৩. ত্বককে আর্দ্রতা দেওয়ার জন্য ফেসপ্যাক

  • ১ চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল
  • ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল

কীভাবে ব্যবহার করবেন:

  • একটি বাটিতে ক্যাস্টর অয়েল এবং অ্যালোভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে নিন।
  • আপনার মুখে এবং ঘাড়ে মিশ্রণটি লাগান।
  • ১০-১৫ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন।
  • আপনার মুখ ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

অরিজিনাল ক্যাস্টর অয়েল চেনার উপায়

  • রঙ: আসল ক্যাস্টর অয়েল সাধারণত গাঢ় হলুদ বা হালকা বাদামী রঙের হয়। যদি তেলটি খুব হালকা বা খুব গাঢ় হয় তবে এটি জাল হতে পারে।
  • গন্ধ: আসল ক্যাস্টর অয়েলের একটি শক্তিশালী গন্ধ থাকে। যদি তেলটি কোনও গন্ধ না করে তবে এটি জাল হতে পারে।
  • ঘনত্ব: আসল ক্যাস্টর অয়েল খুব ঘন। এটি কয়েক ফোঁটাতেও ত্বকে আটকে থাকে। যদি তেলটি খুব পাতলা হয় তবে এটি জাল হতে পারে।
  • পরিশোধক: আসল ক্যাস্টর অয়েল সম্পূর্ণ পরিশোধিত নয়। এতে কিছুটা ময়লা থাকতে পারে। যদি তেলটি পরিষ্কার এবং পরিষ্কার হয় তবে এটি জাল হতে পারে।
  • স্থায়িত্ব: আসল ক্যাস্টর অয়েলের দীর্ঘ স্থায়িত্ব থাকে। এটি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভালো থাকে। যদি তেলটি অল্প সময়ের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায় তবে এটি জাল হতে পারে।

ক্যাস্টর অয়েল এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ক্যাস্টর অয়েল যেমন চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি তেল, ঠিক একইভাবে এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। ক্যাস্টর অয়েল এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কি কি এ সম্পর্কে ধারণা রাখার জরুরী।  

তাই এভয়েড না করে পড়ে নিন ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারে কি কি অসুবিধা গুলো দেখা দিতে পারে সেগুলো। যথা –

  • মাথা ঘুরা
  • অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
  • বমি অথবা বমি বমি ভাব
  • পেটে ব্যথা
  • ডায়রিয়া কিংবা স্কিনের আনুষঙ্গিক কিছু সমস্যা।

এজন্য ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করবেন এবং নিজের শরীরের দিকে নজর রাখবেন যখন ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করছেন। এছাড়াও যদি কোন সমস্যা গুরুতর মনে হয় তাহলে অবশ্যই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। 

ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

১. ত্বকে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম?

✓ যাদের স্কিনের সমস্যা রয়েছে তারা বিভিন্নভাবে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ইতোমধ্যে আমরা উল্লেখ করেছি মাথার খুশকি সমস্যা এবং মাথার স্কিনের সাধারণত আর যে সকল সমস্যা দেখা দেয় সেগুলো নিরাময়ে ক্যাস্টর অয়েল বিশেষ ভূমিকা রাখে। ঠিক একইভাবে যদি আপনার মুখে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে রাতে ঘুমানোর আগে ক্যাস্টর অয়েল চক্রাকারে মেসেজ করলে সুফল পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই সকালের কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলার বিষয়টি মাথায় রাখবেন। 

২. রূপচর্চায় ক্যাস্টর অয়েলের ব্যবহার?

✓ রূপচর্চায় ক্যাস্টর অয়েল এর দশ ব্যবহার এ পর্যায়ে তুলে ধরবো। যথা –

  • চুল ঝরে পড়ার সমস্যা রোধ 
  • রোদে পোড়া দাগ দূর করা
  • ব্রণ এর সমস্যা নিরাময়
  • চুলের ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ
  • বলে রেখা দূর করা
  • পা ফাটা প্রতিরোধ
  • নখ ভঙ্গুরতা প্রতিরোধ
  • ঠোঁট ফাটার সমস্যার সমাধান
  • হাতের যত্নে এবং চোখের পাপড়ি ও ভ্রুর যত্নে।

৩. ক্যাস্টর অয়েলের ক্ষতিকর দিক?

✓ ক্যাস্টর অয়েল কিছু কিছু মানুষের ওপর সাইড ইফেক্ট হিসেবে কিছু ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব, স্কিনের টুকটাক নানাবিধ সমস্যা সহ প্রভৃতি। এটা মূলত সবার ক্ষেত্রে নয় তবে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের সময় অবশ্যই স্কিনের প্রতি আলাদা যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। কেননা সাধারণত কিছু সমস্যা দেখা দেয়। আবার একইভাবে কারো কারো স্কিনের জন্য ক্যাস্টর অয়েল ভালো বলে ত্বকের যত্নেও এটি বেশ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

৪. কোন ক্যাস্টর অয়েল ভালো অরিজিনাল ক্যাস্টর অয়েল চেনার উপায়?

✓ কোন ক্যাস্টর অয়েল ভালো এটা সুনিশ্চিত হয়ে বলা সম্ভব নয়। তবে আপনি প্রোডাক্টের গায়ে লেখা কিছু জিনিস দেখে বুঝতে পারবেন যে আপনি যে ক্যাস্টর অয়েলটি কিনতে যাচ্ছেন সেটা আসল নাকি নকল। তবে অবশ্যই যে কোন তেল কেনার পূর্বে সেটার মেয়াদ কতদিন তা দেখে নিতে ভুলবেন না। 

৫. ক্যাস্টর অয়েল এর দাম কত?

✓ ক্যাস্টর অয়েলের দাম কোম্পানি ও তেলের ধরনের ওপর নির্ভর করে কমবেশি হয়ে থাকে। যেমন–

  • জৈব ক্যাস্টর অয়েল ১০০ মিলিলিটারের দাম মাত্র ৯৯ টাকা
  • জৈব কালো ক্যাস্টর অয়েল ১০০ মিলিলিটারের দাম ১০৫ টাকা
  • কসপ্রভ অর্গানিক ক্যাস্টর এবং নারকেল তেল কম্বো প্যাক ২০০ মিলির দাম ৪৯৮ টাকা
  • দিবানা অর্গানিক ক্যাস্টর অয়েল ১০০ মিলি লিটারের দাম ৩০০ টাকা।

৬. ক্যাস্টর অয়েল কি গরম করা যায়?

✓ হ্যাঁ ক্যাস্টর অয়েলও গরম করা যায়। তবে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ঠান্ডা করে নিতে হবে। 

৭. ক্যাস্টর অয়েল চুলে কতক্ষণ রাখবেন?

✓ ক্যাস্টর অয়েল চুলে ব্যবহারের পর আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত রাখুন।

৮. চুলের জন্য কোন তেল ভালো হবে?

✓ ক্যাস্টর অয়েল সহ আরো কিছু তেল রয়েছে যেগুলো চুলের জন্য ভালো। এ সম্পর্কিত আরো কিছু আর্টিকেল এবং এই তেল গুলো পেয়ে যাবেন আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটে। এর জন্য অনুসন্ধান করুন আমাদের পরদেশী ডট কম ওয়েব সাইটটি।

৯. গ্লিসারিন ও ক্যাস্টর অয়েল কি এক?

✓ না এদের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। তবে ক্যাস্টর অয়েল এবং গ্লিসারিন উভয়ে জিনিসই ময়শ্চারাইজড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

১০. জামাইকান কালো ক্যাস্টর অয়েল কি চুল গজায়?

✓ হ্যাঁ, এই তেল ব্যবহারে চুল গজায়।

তো অডিয়েন্স বন্ধুরা, এই ছিল ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কিত আমাদের আজকের পোস্ট। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *