মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়: যেকোনো টার্গেটে পৌঁছানোর জন্য অবশ্যই পরিশ্রমী এবং মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। এ কারণে জানতে হবে যে কিভাবে মাইন্ড ফোকাস করে কাজ করা যায়। জানতে হবে– কিভাবেই বা মনোযোগ বৃদ্ধি করা যায়!
অনেকেরই সমস্যা থাকে কাজে মনোযোগ দিতে না পারার। এই কারণেই এমন অনেকেই রয়েছেন যারা বারবার পিছিয়ে পড়ছেন এবং হতাশ হচ্ছেন। কিন্তু মজার বিষয় কি জানেন? আপনি যদি শুধুমাত্র কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখেন তাহলেই মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারবেন।
তো আপনি কি মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় জানতে চান, অবগত হতে চান পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে! তাহলে বলবো স্কিপ না করে আজকের পোস্টটি পুরোটা পড়ুন। কেননা আজ আমরা মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় হিসেবে এমন কিছু টিপস ও ট্রিকস সাজেস্ট করতে চলেছি, যা ১০০ শতাংশ কার্যকরী।
মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
মনোযোগ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে— শুরুটা ধীরে ধীরে করা এবং কাজটিকে অভ্যাসে পরিণত করা। আপনার যদি নির্দিষ্ট কোন টার্গেট থেকে থাকে, তাহলে সেই টার্গেটে/লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যে সকল কাজ নিয়মিত করা প্রয়োজন সেগুলো ধীরে ধীরে নিজের অভ্যাসে পরিণত করুন। আর এটা আমরা সবাই জানি অভ্যাস ভয়ানক জিনিস, এমনটাই বলা হয়ে থাকে।
কেননা একবার যদি কেউ অভ্যাসের কবলে পড়ে তাহলে তা থেকে বেরিয়ে আসা বড্ড কঠিন। আর তাই যদি আপনার সেই অভ্যাস ভালো কাজের জন্য হয়ে থাকে তাহলে বলতে পারেন সেটা আপনার জন্য ভয়ানক সুন্দর অভ্যাস। অন্যদিকে যদি খারাপ কাজের জন্য হয়ে থাকে তাহলে সেটা আপনার জন্য ভয়ানক বাজে অভ্যাস।
আর যেহেতু আপনি মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় জানতে ইচ্ছুক তাই বলবো– আপনি যদি আপনার কাজে মনোযোগী হতে চান তাহলে ওই কাজটি করার জন্য একটি রুটিন তৈরি করুন অতঃপর সেই রুটিন মাফিক কাজ করতে করতে সেটাকে অভ্যাসে পরিণত করার চেষ্টাকরুন। তাহলে দেখবেন অটোমেটিক ওই কাজের প্রতি আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতএব আপনি মনোযোগী হয়ে উঠছেন।
তবে হ্যাঁ, মন বেঁধে রাখার জন্য অর্থাৎ মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় হিসেবে আমরা আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেব। যে টিপস গুলো ফলো করলে আপনি মাইন্ড ফোকাস করে মনোযোগ দিয়ে আপনার যেকোনো কাজ করতে পারবেন। তাই অবশ্যই নিচের পয়েন্টগুলো নোট করুন এবং ইমপ্রুভমেন্ট এর জন্য নিজের জীবনের প্রয়োগ করুন।
মনোযোগ বৃদ্ধির মেডিটেশন | মনোযোগ বৃদ্ধির সেরা উপায়
মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রথমত নিজের একটা টার্গেট সেট করতে হবে অতএব নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। অতঃপর সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সম্পূর্ণ কাজকে ছোট ছোট কয়েকটি স্টেপে বিভক্ত করতে হবে।
যেমন ধরুন– আপনি একজন কন্টেন্ট রাইটার। আপনাকে প্রতিদিন ৫ হাজার ওয়ার্ড এর ৩ অথবা ৪ টি আর্টিকেল লিখতে হবে। আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে কিন্তু একটানা ৫-৬ ঘন্টা বা তার বেশি সময় বসে কনটেন্ট লেখা একদমই পসিবল হবে না।
এমনকি আপনি যদি একজন এক্সপার্ট রাইটার হয়ে থাকেন তবুও তিন হাজার ওয়ার্ড এর একটি আর্টিকেল আপনি যদি একটানা বসে লিখতে থাকেন তাহলে মানসম্মত কনটেন্ট আপনি লিখতে পারবেন না। এর জন্য আপনাকে প্রথমত একটি টার্গেট সেট করতে হবে।
আর এক্ষেত্রে টার্গেট হচ্ছে– আপনাকে ৫০০০ ওয়ার্ডের ৩ অথবা ৪ টি আর্টিকেল খুব সুন্দরভাবে লিখে ফেলা। অতঃপর আপনাকে কিছুটা ঘাটাঘাটি করে বা রিসার্চ করে অথবা আন্দাজ করে এটা নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি প্রথম আর্টিকেলটি কত ওয়ার্ডের মধ্যে রাখবেন। এরপর লেখা শুরু করতে হবে।
যখন আপনার প্রথম আর্টিকেল লেখা ফুল ফিল হবে সেই মুহূর্তে নিতে হবে একটি ব্রেক। ব্রেক নিয়ে আপনি কিছু সময় চুপ করে কথাও বসে থাকতে পারেন, রোদ পোহাতে পারেন অথবা কোন খাবার খেতে পারেন বা আপনার পছন্দের যেকোনো একটি কাজ করতে পারেন। যেটা আপনাকে রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য সাহায্য করবে।
পরবর্তীতে ব্রেকের পর ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে দ্বিতীয় আর্টিকেলটি লেখা আরম্ভ করবেন। মূলত এই প্রক্রিয়ায় আপনি যদি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আপনার কাজটিকেও ছোট ছোট স্টেপে ভাগ করেন অল্প অল্প করে সাকসেসের দিকে এগিয়ে যান তাহলেই ওই কাজের প্রতি আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি আপনার বেস্টটা দিয়ে কাজ করতে পারবেন।
এ কারণে সবসময় চেষ্টা করুন কাজে মনোযোগ বাড়ানোর উপায় হিসেবে নিম্ন বর্ণিত কৌশল গুলো অবলম্বন করার। যথা —
- যে কাজটি আপনি করতে চাচ্ছেন সেটা নিয়ে সুন্দর একটা পরিকল্পনা করুন
- কাজ শুরু করার আগে মস্তিস্ককে তৈরি করে নিন
- আপনি যে জিনিসে আসক্ত সেটা থেকে নিজেকে ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে নিন, যেমন ধরুন মোবাইল ফোন বা কোন ব্যক্তির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি। যাকে নিয়ে আপনি অনবরত চিন্তা করেন, ভাবেন এবং আপনার গোলস এ শুধুমাত্র তাকেই জায়গা দিয়েছেন।
- মনোযোগ বাড়াতে নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগান
- মেডিটেশন এবং শরীর চর্চা করুন
- নিজের কমফর্ট জোন তৈরি করে নিন
- আপনি যেখানে থাকছেন সেই জায়গাটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন
- নিজেই নিজেকে মোটিভেট করুন
- নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন
- নিজেই নিজের বন্ধু হয়ে উঠুন এবং আনন্দে থাকুন।
আপনি যদি মনোযোগী হয়ে উঠতে চান তাহলে অবশ্যই নিজেই নিজের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে হবে মন ও মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে হাসিখুশি প্রাণবন্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
মাইন্ড ফোকাসের জন্য করণীয় কাজ
কখনো কখনো নিজের একটা সুন্দর পরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও আমরা আমাদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। এজন্য মাইন্ড ফোকাসের জন্য করনীয় কাজ কি অনেকেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পেতে চান। মূলত আপনি যদি মাইন্ড ফোকাস করতে চান তাহলে নিম্ন বর্ণিত কাজগুলো করতে পারেন। যথা—
- মাইন্ড ফোকাসের জন্য ভালো কিছু মিউজিক শুনতে পারেন
- শ্বাস-প্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম করতে পারেন
- মনোযোগ বৃদ্ধিতে ভালো শ্রোতা হওয়া জরুরী, আর তাই শ্রোতা হওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে কোন মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতে পারেন
- মনোযোগ বৃদ্ধি করে এমন কিছু গেম খেলতে পারেন
- কাজের ফাঁকে বিরতির সময়ে হালকা রূপচর্চা করতে পারেন
- কাজের ফাঁকে প্রয়োজনে ওয়াশরুমে যেতে পারেন
- নিরিবিলি কোন জায়গায় অর্থাৎ প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে পারেন।
মূলত এই প্রত্যেকটি কাজের কথা উল্লেখ করার একটাই কারণ, সেইটা হলো — আপনি যদি এই কাজগুলো করে থাকেন তাহলে আপনার মস্তিষ্ক রিফ্রেস হবে অর্থাৎ আপনি ভাল অনুভব করবেন, আপনার একঘেয়েমি ভাব দূর হবে এবং আপনি যে কোন কাজ মনোযোগ সহকারে করতে পারবেন।
এখন আসুন আরো জেনে নেই– পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত। আর হ্যাঁ পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় কি এ সম্পর্কেও অনেকেই জানতে ইচ্ছুক। এ কারণে নিচের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং খুঁটিনাটি জেনে নিন মনোযোগ বৃদ্ধি সম্পর্কে।
পড়াশোনায় মনোযোগী হবার উপায়
পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধির একাধিক উপায় রয়েছে। তবে আপনি যদি শর্টকাটে এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর সাত উপায় জেনে নিন। যা আমরা নিম্নে উল্লেখ করছি।
১. দায়িত্ববোধ সৃষ্টি
২. ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
৩. স্মৃতিশক্তি প্রখর হবে এমন খাবার গ্রহণ অর্থাৎ ব্রেনের খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা
৪. ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা ব্রেনের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা এবং খেলাধুলা ও ব্যায়ামে সময় দেওয়া।
অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন, পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় এর সঙ্গে ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবারের কি সম্পর্ক! সম্পর্ক রয়েছে। আর এ কারণেই আমরা এই বিষয়টিকে বিশেষভাবে সাজেস্ট করছি। কেননা এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়, ব্রেন ভালোভাবে কাজ করে। যেমন ধরুন বাদাম আখরোট ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে এর বাইরে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর আরো কিছু উপায় রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে–
- একটানা অনেকক্ষণ যাবত না পড়ে মাঝে মাঝে ব্রেক নেওয়া
- প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় পড়ার জন্য সিলেক্ট করা
- বড় লেখাগুলো ধীরে ধীরে পড়া এবং প্যাঁড়া প্যাঁড়া করে পড়ার অভ্যাস করে তোলা
- যে বিষয়টা পড়তে ভালো লাগে না ওই বিষয়ের পেছনে বেশি সময় দেওয়া এবং নিজের ওপর অনেক বেশি প্রেসার ক্রিয়েট না করা
অতএব, যদি আপনার কোন সাবজেক্ট পড়তে ভালো না লাগে তাহলে ওই পড়াটা যাতে আনন্দের সাথে গ্রহণ করতে পারেন এমন ব্যবস্থাপনা বা এমন সিস্টেম চালু করে নেওয়া উচিত। যেমন ধরুন আপনার যদি অংক করতে অনেক বেশি ভয় লাগে বা বোরিং লাগে তাহলে, অংক সম্পর্কিত বিভিন্ন গেম খেলতে পারেন মাঝে মাঝে। আবার মাঝে মাঝে অংক সম্পর্কিত বিভিন্ন অনলাইন ভিডিও দেখে নিজের মস্তিষ্ককে কিছুটা আকৃষ্ট করতে পারেন।
এক কথায়, আপনি যে বিষয়ে পড়ছেন সে বিষয়টা যাতে আপনার নজর কারে এবং আপনার মস্তিষ্কে ভালোভাবে গেঁথে যায় এর জন্য নিজের মনের মত একটি সিস্টেম তৈরি করে নিবেন। যা আপনার মনোযোগ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এবং আপনি ওই পড়াটা খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারবেন।
আর হ্যাঁ, পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় হচ্ছে– আনন্দের সাথে পড়াশোনাকে গ্রহণ করা। তবে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য অনেক দোয়া রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে–
আল্লাহুম্মা ছাব্বিতনী ওয়াজ আলনি হাদিইয়ান মাহদিইয়্যা
বাংলা অর্থ– হে আল্লাহ আপনি আমাকে দৃঢ় রাখুন এবং পথপ্রদর্শক ও সুপথ প্রাপ্ত বানান। এর পাশাপাশি ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলেও পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। কেননা যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তাদের মন বলা যায় সর্বদা প্রফুল্ল থাকে। আর মন যদি প্রফুল্ল আনন্দিত থাকে তাহলে যে কোন কাজ করে শান্তি পাওয়া যায় এবং মনোযোগ দেন সহিত যে কোন কাজ সম্পাদন করা সম্ভব হয়।
মনোযোগ ধরে রাখার উপায়
ইতিমধ্যে আমরা মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় হিসেবে বেশ কয়েকটি কলাকৌশল উল্লেখ করেছি। তবে আপনার প্রশ্ন যদি এটা হয়ে থাকে যে মনোযোগ ধরে রাখার উপায় কি! তাহলে বলবো–
আপনার মনোযোগ নষ্ট করতে পারে এমন বিষয় বা এমন জিনিস থেকে দূরে থাকা হচ্ছে মনোযোগ ধরে রাখার অন্যতম উপায়।
একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন বর্তমান জেনারেশনে প্রায় প্রত্যেকেই মোবাইল ফোনের প্রতি অনেক বেশি আসক্ত। এক মুহূর্ত ফোন হাতে না নিলে যেন চলেই না। বিশেষ করে পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসার সময় যেন মুহূর্তে ফোনের কথা মনে পড়ে যায়। দুই মিনিট পাঁচ মিনিট অথবা আধা ঘন্টা পড়ার মধ্যেই পাশ থেকে মোবাইল ফোন হাতে নেওয়াটা সবার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
আবার এমন অনেক স্টুডেন্ট রয়েছে যারা কিছুক্ষণ পরপর মোবাইল ফোন হাতে নাই সোশ্যাল মিডিয়ায় টুপ করে ঘুরে আসে আর আবারো বইটা নিয়ে পড়া আরম্ভ করে। মূলত এতে করে খুব বাজেভাবে মনোযোগ নষ্ট হয়। আর তাই আসক্তি রয়েছে এমন জিনিস গুলো হাতের নাগালের বাইরে রেখে আসা উচিত। এতে করে পড়াশোনার বাজে কোন কাজের প্রতি মনোযোগ ধরে রাখা যায়। এছাড়াও খাবার খেতে খেতে কোন কাজ করলে মনোযোগ ধরে রাখা যায়।
মনোযোগ বৃদ্ধির ব্যায়াম
এক গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে মানুষের মনোযোগ কোন কিছুতে মাত্র ৮ সেকেন্ড স্থির থাকে। এখন অনেকেই হয়তো এটা জানার পর ভেবে বসবেন যে তাহলে কোন কাজে মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় বা কলাকৌশল গুলো কিভাবে আমাদের জীবনে খাটবে? দেখুন গবেষণায় যেমন এটা প্রমাণিত হয়েছে ঠিক একইভাবে বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন শুধুমাত্র ৮ সেকেন্ডের স্থিরতার মাত্রা কে বাড়ানো সম্ভব।
আর একজনের ক্ষেত্রে মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় এক এক রকম। যেমন আমরা ইতিমধ্যে মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য সুন্দর একটা পরিকল্পনা করার কথা উল্লেখ করেছি, ঠিক একইভাবে কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি দেওয়ার বিষয়টিও সাজেস্ট করেছি। আবার কেউ চাইলে মনোযোগ বাড়ানোর জন্য নির্জন কোন জায়গায় চলে যাবেন এমনটাও বলেছি। আসলে একেকজনের ভালোলাগা একেক রকমের একেক ধরনের। আর তাই কোন কাজটি করলে আপনার মন প্রফুল্ল হবে মস্তিষ্ক থেকে একঘেয়েমি ভাব চলে যাবে এটা আপনাকেই নির্বাচন করতে হবে।
তবে শরীর ও মন ভালো সুস্থ ও প্রফুল্ল রাখার জন্য ব্যায়ামের জুরিমিলা ভার। আর তাই নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। বিশেষ করে মেডিটেশন করুন। কেননা মনোযোগ বৃদ্ধিতে মেডিটেশন বেশ কার্যকরী। তো এখন আসুন আলোচনার শেষ মুহূর্তে জেনে নেই– মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কিত বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর।
মনোযোগ বৃদ্ধি সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর
১. মনোযোগ বৃদ্ধির খাবার
✓মনোযোগ বৃদ্ধির খাবার হিসেবে বেশ কিছু খাবার রয়েছে। যেমন–
- ওটস
- বাদাম
- আখরোট
- ব্লুবেরি
- ডার্ক চকলেট
- মাছ মাংস শহর প্রভৃতি।
২. শিশুর মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
✓ শিশুর মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় হচ্ছে– ছোটবেলা থেকে শিশুদেরকে খুব বেশি চাপ প্রয়োগ না করে আনন্দের সাথে পড়াশোনার বিষয়ে আগ্রহী হিসেবে গড়ে তোলা এবং যেকোনো কাজ মনোযোগ সহকারে করতে হবে এমনটা নিজেদের কাজ কর্মের মাধ্যমে বোঝানো। এছাড়াও শিশুর মনোযোগ বৃদ্ধির আরেকটি উপায় হচ্ছে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো, যে খাবারগুলো স্মৃতিশক্তিকে অনেক বেশি প্রখর করে।
৩. মনোযোগ বৃদ্ধির ঔষধ
✓ মনোযোগ বৃদ্ধির অনেক ঔষধ রয়েছে। তবে তার মধ্যে অত্যন্ত পরিচিত ও উপকারী একটি ঔষধ হচ্ছে Axepta.
৪. পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় কি কি?
✓ পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচিত আর্টিকেলে তুলে ধরেছি। তাই এ প্রশ্নের উত্তর পেতে পুনরায় আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
৫. পড়ালেখায় মন না বসলে কি করা উচিত?
✓ পড়ালেখায় মন না বসলে নিম্ন বর্ণিত কাজগুলো করা উচিত। যথা– লক্ষ্য স্থির করা, টেবিলে বসার অভ্যাস গড়ে তোলা, ব্যায়াম ও খেলাধুলা করা এবং পড়ালেখায় যাতে মন বসে এমন কিছু কাজ করা যে কাজ করলে মস্তিষ্ক স্থির ও প্রাণবন্ত থাকবে।
৬. কিভাবে পড়াশোনায় মন বসানো যায়?
✓ লক্ষ্য স্থির করে, পড়ার টেবিলে পড়তে বসে, নির্দিষ্ট একটি রুটিন তৈরি করে এবং টার্গেট পূরণের উদ্দেশ্য নিয়ে পড়াশোনা করলে পড়াশোনায় মন বসানো যায়।
৭. মনোযোগ ও একাগ্রতা বৃদ্ধির উপায় কি
✓ মনোযোগ ও একাগ্রতা বৃদ্ধির উপায় হচ্ছে মেডিটেশন অথবা ব্যায়াম করা। এছাড়াও মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় হিসেবে আমরা বেশ কয়েকটি বিষয় আর্টিকেলের আলোচনায় উল্লেখ করেছি। মূলত ঐ প্রত্যেকটি বিষয়ই মনোযোগ ও একাগ্রতা বৃদ্ধির উপায়।
৮. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম
✓ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম হচ্ছে- সাঁতার কাটা, প্রতিদিন ভরে নিয়মিত হাঁটাচলা করা, সাইকেল চালানো। তবে এর বাইরে আপনি মস্তিষ্কের স্মৃতি উন্নতিতে প্রতিদিন না পারলেও সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে যে কোন ব্যায়াম করতে পারেন। কেননা গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে ব্যায়াম বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও মেডিটেশন করার মাধ্যমেও আপনি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে পারবেন।
৯. কোন ফল খেলে বুদ্ধি বাড়ে
✓ বেরিয়ে জাতীয় ফলমূল খেলে বুদ্ধি বাড়ে।
১০. কি ঔষধ খেলে বুদ্ধি বাড়ে?
✓ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঔষধ কি, কোন ওষুধ খেলে বুদ্ধি বাড়ে, এমন কি ওষুধ রয়েছে যেটা খেলে মস্তিষ্কের একঘেয়েমি ভাব কেটে যায়? এ প্রশ্নের উত্তরে আমরা এমন কোন ঔষধ সাজেস্ট করছি না। কেননা আপনি যদি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খান তাহলে বুদ্ধি বাড়বে। তবে যদি কোন ওষুধ সেবন করতে চান সে ক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দিব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার।
মনে রাখবেন, প্রত্যেকটি ওষুধের কিছু না কিছু সাইড ইফেক্ট থেকে থাকে। তাই আপনি যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন কোন ঔষধ সেবন করেন সেক্ষেত্রে উপকারের থেকে ক্ষতিটা অনেক বেশি হতে পারে। তাই প্রথমত চিকিৎসকের সাথে আপনার সমস্যার বিষয়টি আলোচনা করুন, তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী চলুন এবং তাদের সাজেস্টক কৃত ঔষধ গুলো সঠিক মাত্রায় সেবন করুন।
তো অডিয়েন্স বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের আলোচনা। আশা করছি মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় হিসেবে আমরা যে টিপস ও ট্রিকস আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি তা এতটুকু হলেও কাজে আসবে। যদি আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে হেল্পফুল মনে হয় তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।